শহীদনূর আহমেদ ::
সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কসহ জেলার অভ্যন্তরীণ সড়কে ২৫টি বেইলি সেতু রয়েছে। এর মধ্যে ৭টি সেতু মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
জোড়াতালির এসব সেতুতে যান চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়ক বিভাগ বলছে এসব সেতু দ্রুত সময়ে সরিয়ে নতুন করে সেতু নির্মাণ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়, সুনামগঞ্জ জেলা সদরের সাথে বিভিন্ন উপজেলা সড়কে প্রায় ২৫টি বেইলি সেতু রয়েছে। এসব সেতুর বয়স ৫০ বছরের অধিক। এসব বেইলি সেতুর মধ্যে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে ৭টি সেতু।
সুনামগঞ্জ জেলা সদরের সাথে দিরাই, শাল্লা, জামালগঞ্জের যোগাযোগের একমাত্র সড়কটি গেছে মদনপুর দিয়ে। এই মদনপুরের বেইলি সেতুটি রয়েছে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। সেতুর মাঝখানে প্রায় সবকটি স্টিলের পাটাতন ভেঙে যাওয়ায় সেগুলো জোড়াতালি দেওয়া হয়েছে। সেতুর পরতে পরতে জোড়াতালি দেয়া। সেতুতে কি পরিমাণ জোড়াতালি রয়েছে তা গুণতেও বিপাকে পড়বেন যে কেউ।
দীর্ঘদিন এই সেতু অধিকতর ঝুঁকিতে থাকায় ভারী যানবাহন উঠলে ধসে পড়ার শঙ্কায় থাকতে হয়। এছাড়া প্রায়ই ক্ষতিগ্রস্ত পাটাতনে যানবাহনের চাকা আটকে বিপত্তি দেখা দেয়। এমনকি বন্ধ হয়ে যায় সড়ক যোগাযোগ। ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতুর পাশেই বৃহৎ বাজেটের একটি সেতু নির্মাণাধীন থাকলেও এর নির্মাণকাজের গতি মন্থর।
একই অবস্থা জগন্নাথপুর-রাণীগঞ্জ সড়কের দুটি বেইলি সেতুর। জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে খুবই ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। সেতুর পাশ দিয়ে বিকল্প সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হলেও কাজের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।
সুনামগঞ্জ-সাচনা বাজার সড়কের কুকড়াপশী ও শালমারা বেইলি সেতুও ঝুঁকিপূর্ণ।
সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর-বিশ্বম্ভরপুর সড়কেও রয়েছে একাধিক ঝুকিপূর্ণ বেইলি সেতু। এসব সেতুরও একাধিক স্থানে স্টিলের পাটাতন উঁচু-নিচু হয়ে যাওয়ায় সেগুলোর ওপরে আবার স্টিলের পাটাতন দিয়ে কোনোরকম জোড়াতালি দেওয়া হয়েছে।
এতে যানবাহন চলাচল ঝুঁকিতে পড়ছে। এদিকে, পুরনো এসব বেইলি সেতু দ্রুত অপসারণ করে নতুন সেতু নির্মানেণ দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার ঠাকুরভোগ গ্রামের ইমাম হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে দিরাই-মদনপুর বেইলি সেতু। জোড়াতালি দিয়ে কোনোভাবে এর উপর দিয়ে যান চলাচল সচল রাখা হয়েছে। অনেক ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। মালবাহী ট্রাক উঠলে সেতুটি নড়ে যায়। সেতুর পাশে নতুন সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। কিন্তু এখন কাজ বন্ধ রয়েছে।
জগন্নাথপুর পৌরসভার বাসিন্দা আলী হোসেন খান বলেন, জগন্নাথপুর-রাণীগঞ্জ সড়কের কাঁটাগাঙ এলাকার বেইলি সেতুটি অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। সরু এই সেতুতে দুইটি গাড়ি পাস হতে পারে না। প্রায় সময় জ্যাম লেগে থাকে। এই সেতুটি জনগুরুত্বপূর্ণ। এই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত দূরপাল্লার পরিবহন যাচ্ছে ঢাকায়। ভারী মালামাল নিয়ে আসে বড় বড় ট্রাক। অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। অনতিবিলম্বে এখানে নতুন সেতু নির্মাণ করা জরুরি। নতুবা দুর্ঘটনা হতে পারে। অতীতে এখানে সেতুর পাটাতন ধসের ইতিহাস রয়েছে।
সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, আগামী এক বছরের মধ্যে বেইলি সেতুগুলো অপসারণ করে নতুন সেতুর কাজ শুরু হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি সেতুর কাজ শেষ পর্যায়ে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
জেলাবাসীর গলার কাঁটা ২৫ বেইলি সেতু
- আপলোড সময় : ১২-০৪-২০২৫ ০৮:০৬:০৬ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১২-০৪-২০২৫ ০৮:১০:৫০ পূর্বাহ্ন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ